Explain the spatial scale. (দৈশিক স্কেলের ব্যাখ্যা দাও)
ভূপৃষ্ঠের জ্যামিতিক আকৃতি ও তার পরিবর্তনশীলতার প্রক্রিয়া আলোচনার জন্য আর একটি প্রশাখা বিজ্ঞানের প্রয়োজন হয়ে পড়ে, এই প্রশাখা বিজ্ঞান ভূমিরূপ বিদ্যা নামে পরিচিত। এই ভূমিরূপ বিদ্যায় ভূমিরূপ হল প্রধান বিষয় এই ভূমিরূপ বিদ্যা স্কেলের ধারণা অত্যন্ত জরুরী, ভূ – বৈচিত্র বিশ্লেষণের জন্য দুই প্রকার স্কেল ব্যবহার করা হয় যথা – ১. দৈশিক স্কেল(spatial scale) ও ২. কালিক স্কেল, (Temporal scale) নিম্নে এই দুই প্রকার স্কেলের মধ্যে দৈশিক স্কেল সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল –
(১) দৈশিক স্কেলের(spatial scale) ধারণা –
ভূপৃষ্ঠের কোন এলাকায় ভূমিরূপ গত পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ ও সাধারণ ধারণা লাভের জন্য আলোচনার ক্ষেত্রের পরিসরকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। একক পরিসর ক্ষেত্রে বিবিধ প্রক্রিয়ায় কি প্রকার ভূমিরূপ গঠিত হয় তা বিশ্লেষণ করতেই ভূমিরূপ বিদ্যায় এই দৈশিক স্কেল কাজে লাগে। বৃহৎ মাঝারি ও ক্ষুদ্র প্রকৃতির ভূমিরূপ এর শ্রেণীবিভাগ ও আলোচনা এই দৈশিক স্কেলের মাধ্যমে করা হয়, বিভিন্ন দৈশিক মাপের ভূমিরূপের গবেষণায় বিভিন্ন রকমের পরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্য বা উপাদান প্রকট হয়ে ওঠে, বিভিন্ন রকমের সমস্যা উদ্ভূত হয় এবং ভিন্নমাত্রার সরলীকরণের আশ্রয় নিতে হয়। এই দৈশিক স্কেল নিরূপণে পথিকৃৎ হলেন এন এম ফেনিম্যান(১৯১৪)
(২) দৈশিক স্কেলের আয়তন –
পরিসরের আয়তন অনুযায়ী দৈশিক স্কেল কে প্রয়োজনমতো বিভক্ত করা যায়, দৈশিক স্কেল অনুসারে ক্ষেত্রফলের ভিত্তিতে কোন স্থানের চার ধরনের আয়তন স্থির করা হয়েছে, যেটিকে নিচে একটি তালিকার মাধ্যমে দেখানো হলো –
স্কেল | আয়তন | বর্ননা |
বৃহৎ (mega) | ১০০,০০০,০০০ বর্গ কিমি | বিশ্ব |
মাঝারি (macro) | ১০০,০০০ বর্গ কিমি – ১০০,০০০,০০০ বর্গ কিমি | মহাদেশীয় |
ক্ষুদ্র (meso) | ১ বর্গ কিমি – ১০,০০০ বর্গ কিমি | আঞ্চলিক |
অতি ক্ষুদ্র (micro) | ১ বর্গ মি -১ বর্গ কিমি | স্থানীয় |
ভূমিরূপের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে দৈশিক আয়তনের যথেষ্ট বৈষম্য লক্ষ্য করা যায় । এশিয়া মহাদেশের ভূমিরূপের বৈচিত্র্য সৃষ্টির কারণ বিশ্লেষণ যেমন একটি বিষয় হতে পারে তেমনি উড়িষ্যার মহানদীর চর ও তার বিনুনী আকৃতির নদী খাত কিংবা মেদিনীপুর জেলা ল্যাটেরাইট ভূমিরূপ এর খোয়াই অর্থাৎ খুব ছোট আকারের ভূমির উপর একটি বিষয় হয়ে উঠতে পারে । সুতরাং খুব বড় আকারের ভূখণ্ড কিংবা মহাদেশীয় অংশ থেকে শুরু করে খুব ছোট ছোট ভূমিরূপ কে নানা দৈশিক স্কেলের পর্যায়ে ভাগ করা যেতে পারে। নিচের সারণীতে বিভিন্ন পর্যায়ে দৈশিক স্কেলের ভূমিরূপ কে চিহ্নিত করা হলো –
ভূমিরূপের দৈশিক ক্রম | |
ক্রম | উদাহরণ |
প্রথম ক্রম | মহাদেশ, মহাসাগরীয় পাত, অভিসারী ও অপসারী পাত সীমানা |
দ্বিতীয় ক্রম | ভূ প্রাকৃতিক অঞ্চল, মালভূমি ,সমভূমি, দ্বীপ মালা, প্রাচীন ভূখণ্ড |
তৃতীয় ক্রম | ভাঁজ ও চ্যুতি যুক্ত শিলাস্তর, আগ্নেয়গিরি, গম্বুজাকৃতি পাহাড় |
চতুর্থ ক্রম | বৃহদায়তন ক্ষয়জাত বা সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ |
পঞ্চম ক্রম | মধ্যম আয়তনের ক্ষয় জাত বা সঞ্চয় জাত ভূমিরূপ |
ষষ্ঠ ক্রম | ক্ষুদ্র আয়তনের ক্ষয় জাত বা সঞ্চয় জাত ভূমিরূপ |
সপ্তম ক্রম | নদী খাত, পাহাড়ি ঢাল, খোয়াই |
অষ্টম ক্রম | ঢালু ও সমতল ঢাল, নদীর চর ,পুল, রিফল |
নবম ক্রম | নদীর তলদেশে এবং বায়ু সৃষ্ট বালিতরঙ্গ |
দশম ক্রম | বালির বা নুড়ির ব্যাসের মাপের ছোট ছোট ভূমিরূপ |
Source – Chorley et. all (1985)
লক্ষণীয় ভূমিরূপের এই দৈশিক ক্রম মূলত ভূমির উচ্চতা ও আয়তন কেই শ্রেণীবিভাগের মাপকাঠি বলে ধরা হলেও উৎপত্তিগত কোন কোন বিভাগ ও এর অন্তর্গত হয়েছে।
(৩) বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের মতানুসারে দৈশিক স্কেল –
ক.) এন. এম ফেনিম্যান(1914) এর মতে দৈশিক ক্রম –
এন. এম. ফানিম্যান হলেন দৈশিক স্কেল নিরূপণের পথিকৃৎ। ১৯১৪ সালে ফ্যানিমান ভূপ্রাকৃতিক এলাকা ধারণা দেন এবং বলেন অ্যাপলেশিয়ান ভাঁজ যুক্ত পার্বত্য এলাকা হলো ভূমিরূপ বিদ্যার গবেষণার ক্ষেত্রে সর্ববৃহৎ দৈশিক পরিসরের এলাকা । এরপর বিভিন্ন গবেষণার ভিত্তিতে এই বৃহৎ এলাকাকে ছোট ছোট মাপের এলাকায় বিভক্ত করে গবেষণা করা যেতে পারে ।
খ.) ক্যারের মতে দৈশিক ক্রম (1963)-
ক্যারের ধারণা অনুযায়ী –
১. প্রথম ক্রম এর ভূমিরূপ হলে অভিসারী ও প্রতিসারী পাত সীমানা দ্বারা নির্ধারিত পাতগুলি
২. দ্বিতীয় ক্রমের ভূমিরূপ হল ১০০০ কিমি ব্যবধানে গঠিত ভূগাঠনিক ক্রেটন অববাহিকা
৩. এই অববাহিকা গুলি চ্যুতি, ফাটল ও শৈলশিরা দ্বারা খন্ডিত। সাধারণত ১০ কিমি আয়তনের চ্যুতি খণ্ড হল ক্যারির মতে তৃতীয় ক্রমের দৈশিক পরিসর ।
গ.) আর.ডি.স্যালিসবারী এর মতে দৈশিক ক্রম (১৯১৯) –
স্যালিসবারী তার দৈশিক ক্রম এর ধারণাটি ভূমিরূপ বিদ্যায় ব্যবহার করেন , তিনি ভূমিরূপ গত এককগুলিকে মূলত তিনটি ক্রমে ব্যবহার করেন যথা –
১. প্রথম ক্রমের ভূমিরূপ হল মহাদেশ ও মহাসাগর এবং পাত সংস্থান তত্ত্ব অনুযায়ী বিভিন্ন পাত ।
২. দ্বিতীয় ক্রমের ভূমিরূপ হল সমভূমি, মালভূমি এবং পর্বতমালা ।
৩. তৃতীয় কমের ভূমিরূপ হল বায়ু, নদী ও হিমবাহের কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ সমূহ ।
2.) Explain the Temporal scale. (কালিক স্কেলের ব্যাখ্যা দাও)
উ:- ভূপৃষ্ঠের জ্যামিতিক আকৃতি ও তার পরিবর্তনশীলতার প্রক্রিয়া আলোচনার জন্য আর একটি প্রশাখা বিজ্ঞানের প্রয়োজন হয়ে পড়ে, এই প্রশাখা বিজ্ঞান ভূমিরূপ বিদ্যা নামে পরিচিত। এই ভূমিরূপ বিদ্যায় ভূমিরূপ হল প্রধান বিষয় এই ভূমিরূপ বিদ্যা স্কেলের ধারণা অত্যন্ত জরুরী, ভূ – বৈচিত্র বিশ্লেষণের জন্য দুই প্রকার স্কেল ব্যবহার করা হয় যথা – ১. দৈশিক স্কেল(spatial scale) ও ২. কালিক স্কেল,(Temporal scale) নিম্নে এই দুই প্রকার স্কেলের মধ্যে দৈশিক স্কেল সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো –
(১) কালিক স্কেলের(Temopral scale) ধারণা
দীর্ঘকালীন সমীক্ষা থেকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ভূপৃষ্ঠ গতিশীল ও সময়ের সঙ্গে ভূমিরূপের পরিবর্তন হয়। ভূমিরূপ পরিবর্তনকারী যে কোন প্রক্রিয়ায় কম বেশি সময় নেয় ভূমিরূপের পরিবর্তনে কে চরমসীমায় নিয়ে যেতে। সময় পরিসরে অনেক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিষয়সমূহের ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ করা যায়। দৈশিক পরিসরের যেমন- দৈর্ঘ্য , প্রস্থ ও উচ্চতা এই তিনটি মাত্রা রয়েছে কিন্তু সময় পরিসরের ক্ষেত্রে কেবল t একটি মাত্রা রয়েছে। দেশের মতো সময়ও ভূগোল শাস্ত্রের আলোচনার অপর একটি ভিত্তি।
(২) বিভিন্ন ভূ বিজ্ঞানীদের মধ্যে কালিক স্কেলের ধারণা –
ক. W.m. Davis 1954 সালে তার গবেষণা পত্রে লেখেন ভৌগোলিক সমস্যার আধুনিক ও যথার্থ পর্যালোচনা সম্ভব যদি ভূমিরূপের সময় ভিত্তিক পরিবর্তন সঠিকভাবে বোঝা যায় ।
খ. সরে (১৯৬২) ভূগোলে দৈশিক পরিসরের সাথে সাথে সময় পরিসরের কথা বলেন। তার মধ্যে দুটি পদ্ধতি পরস্পর বিরোধী নয় বরং পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক। তার মতে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বা পরিমাপযোগ্য ভৌগোলিক বিষয় সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়।
(৩) ভূগোল শাস্ত্রে সময় ভিত্তিক ব্যাখ্যা –
ডেভিড হার্ভে সময় ভিত্তিক ব্যাখ্যার নিম্নলিখিত কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে লিপিবদ্ধ করেন যথা-
ক. সময় সম্পর্কে সার্থক ধারণা থাকলেই সময় ভিত্তিক ব্যাখ্যা সম্ভব ।
খ. ভূগোল শাস্ত্রে বিষয় সমূহের উৎপত্তিগত বা ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা জানা জরুরী ।
গ. বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক, সামাজিক পদ্ধতির ধারণার মাধ্যমে সময়ের বস্তুগত রূপটি ফুটে ওঠে।
ঘ. বিভিন্ন রকমের ভৌগোলিক পদ্ধতির পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে সময় ভিত্তিক ব্যাখ্যা সম্ভব।
ভূগোল শাস্ত্রে সময় ভিত্তিক ব্যাখ্যা কে ডেভিড হার্ভে মূল তিনটি ভাগে ভাগ করেন, যথা-
(ক) উৎপত্তিগত ব্যাখ্যা – এখানে কোন ভৌগোলিক বিষয়ের উৎপত্তির উপর জোর দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে কোন একটি এলাকায় কোন একটি গোষ্ঠী পরিব্রাজন দ্বারা এসে বসতি স্থাপন করেছে, এখানে ওই গোষ্ঠীর কি কারণে উৎপত্তি হয়েছে তার ওপর জোর দেওয়া হলে তা হবে উৎপত্তিগত ব্যাখ্যা।
(খ) বিবর্তনগত ব্যাখ্যা – এই ব্যাখ্যায় কোন ঘটনাকে তার আগের ঘটনাবলীর দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয় । ভারতের বিভিন্ন স্থানের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা , অনুন্নতির দ্বারা বিশ্লেষণ করেন, এটি হলো বিবর্তন গত ব্যাখ্যার উদাহরণ ।
(গ) উৎপত্তিগত ও বিবর্তনবাদী ব্যাখ্যা –
কোন ভৌগোলিক বিষয়ের উৎপত্তি থেকে শুরু করে পরবর্তী পর্যায়ের বিবর্তনের পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনাকে উৎপত্তিগত বিবর্তনবাদী ব্যাখ্যা বলে, উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে কোন একটি গোষ্ঠী কোন একটি এলাকায় বসতির উৎপত্তি থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে কিভাবে বর্তমান অবস্থা এসে পৌঁছেছে ।
(৪) ভূগোল শাস্ত্রে ব্যবহৃত সময় পরিসর –
ভূমিরূপ বিদ্যায় চার প্রকার সময় পরিসরে নিরিখে ভূমিরূপের পরিবর্তন ও বিবর্তন লক্ষ্য করা যায় যথা –
১. ক্ষয়চক্রকালীন সময় পরিসর –
দীর্ঘ সময় ব্যাপী বিবর্তনের মাধ্যমে ভূমিরূপে পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন এই সময় পরিসরে আলোচনা করা হয় । এক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় অন্তঃস্থ ও বহিঃস্থ প্রক্রিয়ার সম্মিলিত ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ফলাফল হিসেবে বৃহৎ স্কেলের বৃহদাকার ভূমিরূপ গঠিত হয়। মূলত বৃহৎ পরিসরের ভূমিরূপ এর বিবর্তন সম্পর্কে স্থূল ধারণা লাভের জন্য এই কাল পর্ব ব্যবহৃত হয়। সময়েরই এই ব্যাপ্তি কে ভূমিরূপ বিজ্ঞানে নানা দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হয়েছে। উইলিয়াম মরিস ডেভিস ভূমিরূপ এর বিবর্তনের প্রক্রিয়াকে একটি অবিচ্ছিন্ন ক্ষয়ের প্রক্রিয়ার হিসেবে দেখেছেন। তার ধারণা অনুযায়ী নদী তার উৎস থেকে মোহনার মধ্যে যে উচ্চতার পার্থক্য থাকে তারই ভিত্তিতে প্রবাহের শক্তি অর্জন করে। ক্রমাগত ক্ষয়ের সাহায্যে নদীর এই শক্তি অববাহিকার মধ্যে বন্টিত হতে থাকে এবং ক্রমশ তা কমতে থাকে । ফলে অববাহিকার ভূমিরূপ একটি ভারসাম্য অবস্থায় পৌঁছায় । ভারসাম্য অবস্থায় পৌঁছানোর পর ভূমিভাগ আবার উত্থিত হয়ে নতুনভাবে ক্ষয় এর প্রক্রিয়ার পুনরুজীবন ঘটাতে পারে ।
বৈশিষ্ট্য
১. এ সময় পুলিশের ব্যাপ্তিকাল কয়েক মিলিয়ন হতে পারে ।
২. আবর্তনভিত্তিক সময়ের ব্যাপ্তির মাধ্যমে ভূমিরূপ বিবর্তনের ক্ষেত্রে স্বাধীন নিয়ন্ত্রক গুলি হল – সময়, ভূমির প্রাথমিক উচ্চতা, শিলাস্তরের গঠন ও প্রকৃতি, জলবায়ু ।
৩. ভূমিরূপের বিবর্তন সংক্রান্ত সকল প্রকার তত্ত্ব যেগুলিতে সময়কে একটি উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়। সেগুলিতে প্রধানত চক্রকালের ব্যবহার করা হয় ,যেমন- ডেভিসের স্বাভাবিক ক্ষয় চক্র ।
২. পর্যায়িত কাল পরিসর
১৮৭৬ সালে জি.কে গিলবার্ট ভৌগোলিক ক্ষয়চক্রের আলোচনার সময় গ্রেড কথাটি সর্ব প্রথম ব্যবহার করেন। নদীর ক্ষয় ও সঞ্চয় কার্যের মাধ্যমে ধীরে ধীরেও ক্রমে ক্রমে ভারসাম্য জনিত অবস্থায় পৌঁছায় যাকে বলা হয় গ্রেড । ক্রমান্বয়ে এই ভারসাম্য অবস্থা লাভের সাপেক্ষে পর্যায়ন কথাটি এসেছে। পৃথিবীতে সক্রিয় বিভিন্ন প্রক্রিয়া সর্বদা অসমতল পৃষ্ঠকে সাধারণ তলে আনার জন্য সর্বদা সচেষ্ট। তাই এই বহিঃস্থ প্রক্রিয়াগুলিকে বলা হয় পর্যায়ন প্রক্রিয়া। ভূপৃষ্ঠের ওপর সর্বদাই এই পর্যায়ন প্রক্রিয়া ক্রিয়াশীল, অমসৃণ তল থেকে পর্যায়িত তলে পৌঁছানোর জন্য পর্যায়ন প্রক্রিয়া গুলির যে সময় লাগে তাকে বলা হয় পর্যায়িত কাল ।
বৈশিষ্ট্য
১. এই পর্যায়িত কালের ব্যাপ্তি শত থেকে সহস্র বছর হতে পারে ।
২. এই কাল পর্বে নেগেটিভ ফিডব্যাক প্রক্রিয়ায় কোন পর্যায়ন শক্তি বিশেষত নদী তার অববাহিকার পরিবর্তন ঘটিয়ে সাময়িকভাবে স্থিতাবস্থায় পৌঁছায় ।
৩. নিয়ত কাল
যে সময় পরিসরে অতি সংক্ষিপ্ত এলাকায় ভূমিরূপের ঈশ্বৎ পরিবর্তন সত্ত্বেও গড় পর্যায়িত অবস্থায় স্থির থাকে সেই সময় পরিসরকে নিয়তকাল বলে এই কাল পর্বের ব্যক্তি ১০ থেকে ১০০ বছর। এই সময় পরিসরে খরা, বন্যা, ইত্যাদি বিশেষ দুর্যোগের প্রভাবে অতি কম ক্ষেত্রফলের কিছু সাময়িক পরিবর্তন ঘটলেও তা ফিরে গড় অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান করে থাকে । ভূমিরূপের বিভিন্ন ছোট ছোট অংশ যেমন কোন পাহাড়ি ঢালে স্বল্পকালীন সময়ের ভিত্তিতে ভারসাম্যের অবস্থা তৈরি হতে পারে । সময়ের এই ব্যাপ্তিতে নদী জালিকার বিন্যাস, কোন পার্বত্য ঢলের ভূমিরূপ এবং আঞ্চলিক স্কেলে মোট প্রবাহ ও পলির পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে ।
৪. তাৎক্ষণিক সময় পরিসর
এই কাল পরিসরে অত্যন্ত ক্ষুদ্র, মাত্র কয়েকদিন থেকে কয়েক মাস এমন কি কয়েক ঘন্টাও হয়ে থাকে । এই সময় পরিসরে বিশেষ কোন বিবর্তন পরিলক্ষিত না হলেও তা করতে থাকে কারণ তা না ঘটলে এর তুলনায় অধিক কাল পর্বে গঠিত বিবর্তন স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়ে তা ঘটতো না। ভূমিরূপের ক্ষুদ্রতম অংশ অথবা ঢালের ছোট ছোট অংশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রভাবের ভূমিকা কমে যায়। সে ক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্রবাহিত জলের পরিমাণ এবং বাহিত পদার্থের পরিমাণ পারস্পরিক প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ভূমিকম্পের বিবর্তন ঘটায়।
3.) Difference between cyclic time and graded time. (ক্ষয়চক্রকালীন সময় পরিসর ও পর্যায়িত সময় পরিসরের মধ্যে পার্থক্য)
বিষয় | ক্ষয়চক্রকালীন সময় পরিসর | পর্যায়িত সময় পরিসর |
ব্যবহার | বৃহৎ পরিসরের ভূমিরূপ এর পরিবর্তন সংক্রান্ত সাধারণীকরণ করবার জন্য অর্থাৎ বৃহৎ পরিসরের ভূমিরূপ এর বিবর্তন সম্পর্কে স্থুল ধারণা লাভের জন্য এই কাল পর্ব ব্যবহৃত হয়। | এক্ষেত্রে একক পরিসরে স্থানের পরিবর্তন সংক্রান্ত পর্যালোচনা করা হয়। |
ব্যাপ্তি | ক্ষয়চক্রকালীন সময় পরিসরের ব্যাপ্তি ভূতাত্ত্বিক কাল জুড়ে হতে পারে অথবা কয়েক মিলিয়ন হতে পারে | পর্যায়িত কালের ব্যাপ্তি সাধারণত শত থেকে সহস্র বছর হতে পারে |
কার্যকাল | এটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া | এটি স্বল্পমেয়াদী প্রক্রিয়া |
উদাহরণ | ভূমিরূপ এর বিবর্তন সংক্রান্ত সকল প্রকার তত্ত্ব যথা – ডেভিসের স্বাভাবিক ক্ষয়চক্র এর অন্তর্গত | স্বল্পমেয়াদী ভূমিরূপের পরিবর্তন যেমন – নদীর ক্ষয়, সঞ্চয় কাজ । |
4. What is geological time scale? Discuss the major events. (ভূতাত্ত্বিক সময় সারণি বলতে কি বোঝায়? ভূতাত্ত্বিক সময় সারণিতে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা কর)
১. ভূতাত্ত্বিক সময় সারণি (Geological time scale)
পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ভূতাত্ত্বিক, ভূপ্রাকৃতিক ,জলবায়ুগত, ঘটনা তথা জীবজগতের সৃষ্টি বিবর্তন ও ধ্বংসের ঘটনাগুলিকে ধারাবাহিক ও ক্রমানুসারে সময় ভিত্তিক বিজ্ঞানসম্মতভাবে সজ্জিত করন কে বলা হয় ভূতাত্ত্বিক সময় সারণি
২. শ্রেণীবিভাগ (classification)
পৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক সময় সারণি কে অ চারটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয় , যথা –
ক. মহাযুগ (EON)
খ. কল্প (ERA)
গ. যুগ (PERIOD)
ঘ. উপযুগ (EPOCH)
ক.) মহাযুগ (EON)–
এটিকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায় যথা –
Proterozoic Eon
Phanerozoic Eon
Proterozoic Eon –
ইতালি শব্দ Proterozoic এর অর্থ গুপ্তজীবী এর প্রারম্ভিক সময়কাল আজ থেকে প্রায় ৪৬০ কোটি বছর আগে এবং এর স্থায়িত্বকাল প্রায় ৪০০ কোটি বছর অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় 460 কোটি বছর আগে এর সমাপ্তি ঘটে।
Phanerozoic Eon-
এর প্রারম্ভিক সময়কাল প্রায় আজ থেকে ৬০ কোটি বছর আগে একে আবার তিনটি কল্পে (ERA) ভাগ করা যায়,
খ.) কল্প (ERA) –
Phanerozoic Eon এর থেকে ERA – এর সূচনা হয়, পৃথিবীর সময় সারণিতে তিনটি ERA – এর উপস্থিতি আছে যথা –
১. প্যালিওজোয়িক(palaeozoic era)
এর সূচনা হয় আজ থেকে প্রায় ৬০ কোটি বছর আগে ও সমাপ্তি ঘটে আজ থেকে প্রায় সাড়ে ২২ কোটি বছর আগে অর্থাৎ এটি দ্বিতীয় EON এর প্রথম উপবিভাগ, স্থায়িত্ব প্রায় ৩৭.৫ কোটি বছর ।
২. মেসোজোয়িক(mesozoic era) –
এরপর এ সূচনা। এর সূচনাকাল আজ থেকে প্রায় সাড়ে ২২ কোটি বছর আগে এবং এর সমাপ্তি ঘটে আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি বছর আগে অর্থাৎ এর বিস্তারকাল ১৬ কোটি বছর ।
৩. সিনোজোয়িক (cenozoic era)
পৃথিবীর ইতিহাসে অন্তিম কল্প হল এটি । এর সূচনা হয় আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি বছর পূর্বে মেসোজোয়িক কল্পের অন্তিম লগ্নে ।
গ.) যুগ (PERIOD)
Periods of palaeozoic era –
১. ক্যামব্রিয়ান পিরিয়ড – প্যালিওজোয়িক যুগের প্রারম্ভিক কাল হলো ক্যামব্রিয়ান পিরিয়ড । এর সূচনাকাল ৬০ কোটি বছর পূর্বে এবং সমাপ্তি ৫০ কোটি বছর পূর্বে । অর্থাৎ বিস্তার কাল ১০ কোটি বছর ।
২. অরডোভিসিয়ান পিরিয়ড – ক্যামব্রিয়ান পিরিয়ডের পরে এর সূচনা অর্থাৎ এর সূচনাকাল আজ থেকে প্রায় ৫০ কোটি বছর পূর্বে এবং এর অন্তিম কাল সাড়ে ৪৩ কোটি বছর পূর্বে অর্থাৎ এই স্থায়িত্বকাল সাড়ে ৬ কোটি বছর।
৩. সিলুরিয়ান পিরিয়ড – অরডোভিসিয়ান পিরিয়ডের পর এর সূচনা সূচনাকাল আজ থেকে প্রায় ৪৩.৫ কোটি বছর পূর্বে এবং অন্তিম কাল ৩৯.৫ কোটি বছর পূর্বে অর্থাৎ স্থায়িত্বকাল ৪ কোটি বছর।
৪.ডেভোনিয়ান পিরিয়ড – এর প্রারম্ভিক কাল সিলুরিয়ান পিরিয়ডের শেষে অর্থাৎ ৩৯.৫ কোটি বছর পূর্বে এবং অন্তিম কাল ৩৪.৫ কোটি বছর আগে বিস্তার কাল ৫ কোটি বছর ।
৫. কার্বনিফেরোস পিরিয়ড – এর প্রারম্ভিক কাল ৩৪.৫ কোটি বছর আগে এবং সমাপ্তি ২৮ কোটি বছর আগে অর্থাৎ স্থায়িত্বকাল ৬.৫ কোটি বছর ।
৬. পার্মিয়ান পিরিয়ড – প্যালিওজোয়িক Era এর অন্তিম পিরিয়ড এটি । স্থায়িত্বকাল ৫.৫ কোটি বছর সূচনাকাল ২৮ কোটি বছর আগে ও সমাপ্তিকাল ২২.৫ কোটি বছর আগে ।
Periods of mesozoic era –
মেসোজোয়িক era কে তিনটে পিরিয়ডে ভাগ করা হয় যথা –
১. ট্রয়াসিক পিরিয়ড – মেসোজোয়িক যুগের প্রথম পিরিয়ডি এটি। এর সূচনাকাল ২২.৫ কোটি আগে ও সমাপ্তি ঘটে ২০.৫ কোটি আগে স্থায়িত্বকাল ২ কোটি বছর।
২. জুরাসিক পিরিয়ড – এর সূচনাকাল ২০.৫ কোটি বছর আগে এবং সমাপ্ত কাল ১৪.৫ কোটি বছর আগে স্থায়িত্বকাল ৬ কোটি বছর ।
৩. ক্রিটেসিয়াস পিরিয়ড – এর সূচনা কাল জুরাসিকের পর , অর্থাৎ ১৪.৫ কোটি বছর এবং অন্তিম কাল ৬.৫ কোটি বছর আগে স্থায়িত্বকাল ৮ কোটি বছর
Periods of cenozoic era –
একে দুটি পিরিয়ড এ ভাগ করা যায় যথা –
১. টার্সিয়ারি পিরিয়ড – এই সূচনা হয় সেনোজোয়িক যুগের পর থেকে, অর্থাৎ ৬.৫ কোটি বছর আগে এর সূচনাকাল এবং অন্তিম কাল ০.২ কোটি বছর আগে এর স্থায়িত্বকাল ৬.৩ কোটি বছর ।
২. কোয়াটারনারী পিরিয়ড – ইহা পৃথিবীর নবীনতম যুগ এর প্রারম্ভিক সময়কাল ০.২ কোটি বছর আগে এবং বর্তমানেও প্রবাহমান ।
ঘ.) উপযুগ (EPOCH) –
EPOCH OF TERTIARY PERIOD
১. প্যালিওসিন – সূচনাকাল – ৬.৫ কোটি বছর আগে, অন্তিম কাল – ৫.৫ কোটি বছর আগে, স্থায়িত্ব – ১ কোটি বছর ।
২. ইওসিন – সূচনাকাল – ৫.৫ কোটি বছর আগে, অন্তিম কাল – ৩.৫ কোটি বছর আগে, স্থায়িত্ব – ২ কোটি বছর।
৩. অলিগোসিন – সূচনাকাল – ৩.৫ কোটি বছর আগে, অন্তিম কাল – ২ কোটি বছর আগে, স্থায়িত্ব – ১ কোটি বছর
৪. মায়োসিন – সূচনাকাল – ২ কোটি বছর আগে, অন্তিম কাল – ৬০ লক্ষ বছর আগে, স্থায়িত্ব – ১.৪ কোটি বছর
৫. প্লায়োসিন – সূচনাকাল – ৬০ লক্ষ বছর আগে, অন্তিম কাল – ২০ লক্ষ বছর আগে, স্থায়িত্ব – ৪০ লক্ষ বছর
EPOCH OF QUATARNARY PERIOD
১. প্লিস্টোসিন – সূচনাকাল – ২০ লক্ষ বছর আগে, অন্তিম কাল – ১০ হাজার বছর আগে, স্থায়িত্ব – ১৯ লক্ষ ৯০ হাজার
২. হলোসিন – ১০ হাজার – বর্তমান
প্রধান তিনটি যুগের বৈশিষ্ট্য –
১. প্যালিওজোয়িক যুগের বৈশিষ্ট্য –
ক. মাছ, সামুদ্রিক প্রাণী, আণুবীক্ষণিক জীব ও বিভিন্ন অমেরুদন্ডী প্রাণীর অস্তিত্ব দেখা যায় ।
খ. বিভিন্ন শিলাস্তরের মধ্যে বহুমূল্যবান খনিজ যথা – সোনা, রুপা ,তামা ,ব্রঞ্জের অস্তিত্ব পাওয়া যায় ।
গ. সরীসৃপ প্রাণীর উদ্ভব ঘটেছিল ।
২. মেসোজোয়িক যুগের বৈশিষ্ট্য –
ক. বিভিন্ন সরীসৃপ প্রাণী স্থলভাগ ও জলভাগে ছড়িয়ে পড়ে ।
খ. বিশালাকার ভয়ানক জীব ও ফলমূল যুক্ত বৃক্ষের সৃষ্টি হয় ।
গ. সমুদ্রভাগের বিস্তার স্থলভাগের উপর বাড়তে থাকে ।
৩. সিনোজোয়িক যুগের বৈশিষ্ট্য –
ক. পৃথিবীতে তাপমাত্রা কমে যায় , ভূমিভাগের অনেকাংশ বরফ আবৃত হয় ।
খ. অনেক সরীসৃপ প্রাণীর বিনাশ ঘটে, স্তন্যপায়ী প্রাণীর আবির্ভাব ঘটে ।
গ. ভূ- আলোড়নের ফলে অনেক ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয় ।
প্যালিওজোয়িক যুগের বিভিন্ন পিরিয়ডের বৈশিষ্ট্য –
১.ক্যামব্রিয়ান পিরিয়ড –
ক. এই যুগের শেষে পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের উদ্ভব ঘটে ।
খ. বালুকাময় চুন জাতীয় শিলার আবির্ভাব ঘটে এবং এতে অমেরুদন্ডী নিম্ন শ্রেণীর প্রাণীর সৃষ্টি হয় ।
২.অরডোভিসিয়ান পিরিয়ড –
ক. এই সময় পৃথিবীর এক বিরাট অংশ সমুদ্র নিমজ্জিত হয়েছিল ।
খ. এসময় সৃষ্ট সমস্ত প্রজাতি বিলুপ্তপ্রায় ।
গ. জৈবিক বিকাশ রূপে সামুদ্রিক বনস্পতি আবির্ভূত হয় ।
৩. সিলুরিয়ান পিরিয়ড
ক. এই যুগে বায়ুমন্ডলে জলবায়ুর পরিবর্তন হয় ।
খ. জলচর প্রাণী রূপে মাছের আবির্ভাব হয় ।
গ. পত্রহীন উদ্ভিদ পরিলক্ষিত হয় ।
ঘ. এ যুগে মেরুদন্ডী প্রাণীর আবির্ভাব হওয়ায় একে Age of vertiberiates বলে ।
ঙ. এই যুগে সাধারণত উষ্ণ ও সমভাবাপন্ন থাকলেও কোথাও কোথাও শুষ্ক জলবায়ু দেখা যায় ।
৪. কার্বনিফেরোস পিরিয়ড –
ক. উভচর প্রাণীদের বিকাশ ঘটে ।
খ. এ সময় মাছ, সরীসৃপ, ডানাওয়ালা পতঙ্গ ফার্ন জাতীয় উদ্ভিদের সৃষ্টি হয় ।
৫. পার্মিয়ান পিরিয়ড –
ক. এই যুগে সরীসৃপের সংখ্যা প্রচুর বৃদ্ধি পায় ।
খ. পৃথিবীতে তাপমাত্রা পরিবর্তনের ফলে চিরহরিৎ বৃক্ষের সংখ্যার হ্রাস পায় ও পর্ণমোচী বৃক্ষের আবির্ভাব ঘটে ।
গ. পাইন , ফার, পাম জাতীয় গাছের উদ্ভব হয় এবং প্রাণী ও উদ্ভিদ ভ্রুনের ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয় ।
মেসোজোয়িক যুগের বিভিন্ন পিরিয়ডের বৈশিষ্ট্য –
১. ট্রায়াসিক –
ক. এই যুগে মহাদেশ গুলি সঞ্চালিত হয়ে কিছুটা বর্তমান আকার ধারণ করে ।
খ. উত্তর গোলার্ধে শুষ্ক ও দক্ষিণ গোলার্ধে অতিশীতল জলবায়ু অবস্থান করে ।
গ. প্রাণীদের মধ্যে দেহগত ও আচরণগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় ।
ঘ. স্বল্প জীবাশ্ম পরিলক্ষিত হয় এবং ছোট স্তন্যপায়ী জীবের আবির্ভাব ঘটে ।
২.জুরাসিক –
ক. এই যুগের শেষভাগে জলবায়ুর পরিবর্তনে ডাইনোসরের অবলুপ্তি হয় ।
খ. এই সময় পৃথিবীর অধিকাংশ স্থান সমুদ্র এর তলায় ছিল ।
গ. এই যুগে সপুষ্পক উদ্ভিদের আবির্ভাব ঘটে এবং পাখিরা আকাশে উড়তে শুরু করে ।
৩. ক্রিটেসাস –
ক. এই যুগে বিশালাকার খড়ি মাটির চাইয়ের সৃষ্টি হয় ।
খ. দক্ষিণ ভারতে লাভার (যথা- ডেকান ট্র্যাপ) সঞ্চয় হয় ।
গ. নদীতে বড় বড় দ্বীপ সহ উপকূল অঞ্চলে ব- দ্বীপ ও জলাভূমির অস্তিত্ব দেখা যায় ।
ঘ. সামুদ্রিক প্রাণীর মধ্যে হাঙর প্রধান ও স্থলভাগের টিকটিকি ও গিরগিটি দেখা যায় ।
সিনোজোয়িক যুগের বিভিন্ন পিরিয়ড এর বৈশিষ্ট্য –
ক.) টারশিয়ারি –
১. প্যালিওসিন, ইওসিন,অলিগোসিন –
প্যালিওসিনের এর সময় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আবির্ভাব ঘটে, ইওসিনের সময় তৃণ দানা বিশিষ্ট বন্য ফসল ও ফলের উৎপত্তি এবং পাখির দাঁত লোপ পায় এবং অলিগোসিনের সময় হিমালয় এবং আল্পস পর্বতের উত্থান এবং বাঘ, কচ্ছপ গিরগিটির উত্থান ঘটে ।
২.মায়োসিন ও প্লায়োসিন –
মায়োসিন যুগে স্তন্যপায়ীদের দ্রুত উন্নতি ঘটে এবং হিমালয় ও আল্পস পর্বতের গঠন অব্যাহত থাকে এবং প্লায়োসিন যুগে ক্যারিবিয়ান দ্বীপের সৃষ্টি ও হাতি এবং ঘোড়ার প্রজাতির সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পায়।
খ.) কোয়াটারনারি –
১. প্লিসটোসিন –
ক. সামুদ্রিক প্রাণীর পরিবর্তন হয়নি ।
খ. ভূমি ভাগে আদিম মানব দেখা যায় ।
গ. জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃহৎ জীবগোষ্ঠীর পরিবর্তন ঘটে ।
২. হলোসিন –
ক. এই সময় থেকে মানুষ আধুনিক হতে শুরু করে ।
খ. বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে দূষিত হয় ।
গ. এশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশাল মরু অঞ্চলের সৃষ্টি হয় ।